নিউজবাংলা, ভগবানপুর:শীতেরসন্ধ্যায়সুরেরমূর্ছনাবুনেদেওয়ারকথাছিল।কিন্তুসুরকাটলবেনজিরবিশৃঙ্খলাআরঅপমানে।পূর্বমেদিনীপুরেরভগবানপুরেএকটিবেসরকারিস্কুলেরবার্ষিকঅনুষ্ঠানেগানগাইতেগিয়েচরমহেনস্থারশিকারহলেনকলকাতারবিশিষ্টসঙ্গীতশিল্পীলগ্নজীতাচক্র…
নিউজবাংলা, ভগবানপুর: শীতের সন্ধ্যায় সুরের মূর্ছনা বুনে দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সুর কাটল বেনজির বিশৃঙ্খলা আর অপমানে। পূর্ব মেদিনীপুরের ভগবানপুরে একটি বেসরকারি স্কুলের বার্ষিক অনুষ্ঠানে গান গাইতে গিয়ে চরম হেনস্থার শিকার হলেন কলকাতার বিশিষ্ট সঙ্গীতশিল্পী লগ্নজীতা চক্রবর্তী (Lagnajita Chakraborty)। তাঁর অভিযোগ, ‘দেবী চৌধুরানী’ ছবির জনপ্রিয় ‘জয় মা’ গানটি গাওয়ার সময় তাঁকে মাঝপথে থামিয়ে দেওয়া হয় এবং শারীরিক ও মানসিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়। এই ঘটনায় অভিযুক্ত স্কুল মালিক মেহেবুব মল্লিককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
ঠিক কী ঘটেছিল?
শনিবার
রাতে
ভগবানপুরের ওই
স্কুলের বার্ষিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত ছিলেন
লগ্নজীতা ও
তাঁর
দলবল।
অনুষ্ঠান চলাকালীন শিল্পী
যখন
পর্দায়
তাঁর
গাওয়া
বিখ্যাত গান
‘জয়
মা’
ধরতে
যান,
তখনই
বিপত্তি বাঁধে।
লগ্নজিতার অভিযোগ,
স্কুলের মালিক
মেহেবুব মল্লিক
হঠাৎই
স্টেজে
উঠে
অকথ্য
ভাষায়
গালিগালাজ শুরু
করেন।
শিল্পীর দাবি,
ওই
ব্যক্তি চিৎকার
করে
বলতে
থাকেন,
‘‘অনেক
‘জাগো
মা’
হয়েছে,
এবার
থামাও।
এসব
চলবে
না,
এবার
কোনও
‘সেকুলার’ (ধর্মনিরপেক্ষ) গান
গাও।’’
অভিযোগপত্র অনুযায়ী, শুধু
মৌখিক
অপমানই
নয়,
এরপর
শিল্পীকে শারীরিক ভাবেও
হেনস্থা করা
হয়।
পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে
উঠলে
অপমানিত লগ্নজীতা মাঝপথেই অনুষ্ঠান ছেড়ে
বেরিয়ে
যান।
দলবল
নিয়ে
সোজা
পৌঁছন
ভগবানপুর থানায়।
রাতেই
দায়ের
করা
হয়
লিখিত
অভিযোগ।
ঘটনার খবর চাউর হতেই নড়েচড়ে বসে জেলা পুলিশ প্রশাসন। পূর্ব মেদিনীপুরের ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার মিতুন কুমার দে জানান, শিল্পীর সঙ্গে কথা বলে তাঁকে সব রকম সহযোগিতার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। ঘটনার পর থেকেই পলাতক ছিলেন অভিযুক্ত মেহেবুব মল্লিক। পুলিশ সুপার বলেন, ‘‘অভিযুক্তকে ধরতে রাতভর তল্লাশি চালানো হয়। অবশেষে তাঁকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়েছে।’’ পাশাপাশি, ঘটনার রাতে পুলিশের তরফে কোনও গাফিলতি ছিল কি না, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর।
‘‘আমি স্টেজে
গান
গাইছি,
সেই
সময়
মালিক
পক্ষ
উঠে
এসে
গালিগালাজ করে
বললেন—
অনেক
জাগো
মা
হয়েছে,
এবার
সেকুলার কিছু
গাও।
এটা
মেনে
নেওয়া
যায়
না।’’
— লগ্নজীতা চক্রবর্তী, সঙ্গীতশিল্পী
এই
ঘটনা
প্রকাশ্যে আসতেই
আসরে
নেমেছে
বিজেপি। রাজ্য
সরকারের সমালোচনা করে
বিজেপি
নেতা
শঙ্কুদেব পণ্ডা
এক
সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন,
‘‘যে
স্কুল
একজন
শিল্পীকে গান
গাইতে
গিয়ে
ধর্মের
দোহাই
দিয়ে
বাধা
দেয়,
সেখানে
শিশুদের কী
শিক্ষা
দেওয়া
হচ্ছে?
এই
স্কুলগুলি কীভাবে
অনুমোদন পায়?’’
শিক্ষামন্ত্রী এবং
রাজ্য
সরকারের জবাবদিহি দাবি
করেছেন
তিনি।
কেন
শিল্পীকে থানায়
দীর্ঘক্ষণ বসে
থাকতে
হল,
তা
নিয়েও
প্রশ্ন
তুলেছে
গেরুয়া
শিবির।
তবে শিল্পী লগ্নজীতা বা স্কুল কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে পরবর্তী কোনো প্রতিক্রিয়া মেলেনি। গোটা ঘটনায় সাংস্কৃতিক মহলে তীব্র চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। শিল্পীর মর্যাদা ও বাকস্বাধীনতার ওপর এমন আক্রমণ নিয়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে নেটপাড়াতেও।

No comments