NewzBangla, Kolkata :ভালোগাইতেগেলেশুধুরেওয়াজইশেষকথানয়, প্রয়োজনসঠিকখাদ্যাভ্যাসএবংবিজ্ঞানসম্মতজীবনযাপন।আবারএইসুরবারাগসঙ্গীতইকীভাবেমানুষেরমনওশরীরেরওপরনিরাময়কারী (থেরাপিউটিক) প্রভাবফেলতেপারে— সঙ্গীতওবিজ্ঞানেরএইমেলবন্ধননিয়েইএকঅভিনবকর্…
NewzBangla, Kolkata :
ভালো গাইতে গেলে শুধু রেওয়াজই শেষ কথা নয়, প্রয়োজন সঠিক খাদ্যাভ্যাস এবং বিজ্ঞানসম্মত জীবনযাপন। আবার এই সুর বা
রাগসঙ্গীতই কীভাবে মানুষের মন ও শরীরের
ওপর নিরাময়কারী (থেরাপিউটিক) প্রভাব ফেলতে পারে— সঙ্গীত ও বিজ্ঞানের এই
মেলবন্ধন নিয়েই এক অভিনব কর্মশালার
সাক্ষী থাকল কামারহাটি।
সম্প্রতি
কামারহাটিতে ‘এফএসটিএন এক্সপ্লোরেশন ফাউন্ডেশন’ (FSTN
Exploration Foundation)-এর
উদ্যোগে আয়োজিত হল এই বিশেষ
কর্মশালা। বিষয় ছিল—কণ্ঠস্বরের সুস্থতা ও রাগসঙ্গীতের থেরাপিউটিক
শক্তি। দীর্ঘ তিন ঘণ্টার (Music Therapy)
এই কর্মশালায় প্রশিক্ষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিম মেদিনীপুরের ভট্টর কলেজের (স্ব-শাসিত) সঙ্গীত বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও সহকারী অধ্যাপক
ড. শান্তনু তেওয়ারী। তাঁর গবেষণালব্ধ আলোচনা ও হাতে-কলমে
শিক্ষা এই কর্মশালাকে এক
ভিন্ন মাত্রা দেয়। এফএসটিএন-এর বিভিন্ন বর্ষের
মোট ৩২ জন শিক্ষার্থী
এই কর্মশালায় অংশ নেন।
কণ্ঠের
যত্নে ডায়েট চার্ট গানের গলার জন্য ঠিক কোন ধরনের খাবার প্রয়োজন, তা নিয়ে বিস্তারিত
আলোচনা করেন ড. তেওয়ারী। তিনি
স্পষ্ট জানান, কণ্ঠ মানবদেহের সবচেয়ে সংবেদনশীল যন্ত্র, তাই এর রক্ষণাবেক্ষণে সচেতনতা
জরুরি। তাঁর পরামর্শ অনুযায়ী:
·
গলা
ভালো রাখতে গরম জল, মধু-লেবু, মরসুমি ফল ও শাকসবজি
অত্যন্ত উপকারী।
·
সঙ্গীতশিল্পীদের
অতিরিক্ত ঠান্ডা পানীয়, ভাজাভুগি বা তেল-মশলাদার
খাবার এড়িয়ে চলাই শ্রেয়।
·
দীর্ঘক্ষণ
রেওয়াজ বা পারফর্ম্যান্সের আগে ও
পরে শরীরে জলের ভারসাম্য (Hydration) বজায় রাখা আবশ্যিক।
রাগসঙ্গীত
যখন থেরাপি কর্মশালার দ্বিতীয় পর্বে উঠে আসে রাগসঙ্গীতের নিরাময় ক্ষমতার কথা। কোন রাগ মানুষের মনে কী প্রভাব ফেলে,
তা বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে ব্যাখ্যা করেন ড. তেওয়ারী। তিনি
জানান:
·
ভৈরবী:
মানসিক প্রশান্তি ও ভারসাম্য ফিরিয়ে
আনে।
·
ইমন:
সৃজনশীলতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
·
ভূপালী:
মানসিক চাপ বা স্ট্রেস কমাতে
অদ্বিতীয়।
·
কল্যাণী:
একাগ্রতা বা কনসেন্ট্রেশন বাড়াতে
ব্যবহৃত হয়।
·
ধানী:
চিন্তাভাবনার স্বচ্ছতা আনতে সাহায্য করে।
তত্ত্ব
ও তালিমের মেলবন্ধন শুধু তাত্ত্বিক আলোচনা নয়, কর্মশালায় ছিল ‘লাইভ ডেমো’ সেশন। শিক্ষার্থীরা নির্দিষ্ট রাগে আলাপ ও সুরবিস্তার করেন
এবং ড. তেওয়ারী হাতে-কলমে তাঁদের ভুলত্রুটি সংশোধন করে দেন। শিক্ষার্থীদের মতে, ভোকাল হেলথ বা কণ্ঠস্বরের স্বাস্থ্য
নিয়ে এত বিস্তারিত ও
বিজ্ঞানসম্মত আলোচনা এর আগে সচরাচর
দেখা যায়নি। এক শিক্ষার্থীর কথায়,
‘‘রাগসঙ্গীত যে এতটা বৈজ্ঞানিক
হতে পারে, আজকের কর্মশালায় না এলে বিশ্বাসই
করতাম না।’’
কর্মশালা
শেষে ড. শান্তনু তেওয়ারী
বলেন, ‘‘সঙ্গীতের গভীরতা অপরিসীম। খাদ্যাভ্যাসের সঙ্গে কণ্ঠস্বরের সম্পর্ক কতটা নিবিড়, তা একজন সঙ্গীতজ্ঞের
জানা অত্যন্ত জরুরি। এই ধরনের বিজ্ঞানসম্মত
আলোচনা ও গবেষণা আরও
বেশি করে হওয়া প্রয়োজন।’’
আয়োজক সংস্থা এফএসটিএন-এর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, স্বাস্থ্য ও সঙ্গীতের এই মেলবন্ধন শিক্ষার্থীদের পেশাদার জীবনে বড় ভূমিকা নেবে। ভবিষ্যতে এই ধরনের থিম-ভিত্তিক কর্মশালা ও স্বল্পমেয়াদি মিউজিক থেরাপি কোর্স চালুর পরিকল্পনাও রয়েছে তাঁদের।
![]() |

No comments