নিউজবাংলা ডেস্ক, ধুবড়ি (আসাম) : অসমের ধুবড়ি জেলায় এক সাংবাদিককে গ্রেফতারের ঘটনা ঘিরে ক্রমেই চড়ছে উত্তাপ। বেসরকারী টিভি চ্যানেলের সাংবাদিক রাজীব শর্মা দিন কয়েক ধরেই ধুবড়ি জেলায় গবাদিপশু পাচারের ঘটনা নিয়ে একাধিক সংবাদ তুলে ধরেন।যেখ…
নিউজবাংলা ডেস্ক, ধুবড়ি (আসাম) : অসমের ধুবড়ি জেলায় এক সাংবাদিককে গ্রেফতারের ঘটনা ঘিরে ক্রমেই চড়ছে উত্তাপ। বেসরকারী টিভি চ্যানেলের সাংবাদিক রাজীব শর্মা দিন কয়েক ধরেই ধুবড়ি জেলায় গবাদিপশু পাচারের ঘটনা নিয়ে একাধিক সংবাদ তুলে ধরেন।
যেখানে তিনি দাবী করেন, জেলা পুলিশ এবং ডিএফও-র মধ্যে সংযোগের মাধ্যমে এই পশু পাচারেরর রমরমা চলছে। এরই মাঝে বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) বিশ্বজিৎ রায় পুলিশে অভিযোগ জানিয়ে বলেন, ওই সাংবাদিক চাঁদাবাজির চেষ্টা করেছেন এবং তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে দুর্ব্যবহারও করেছেন।
এই অভিযোগের ভিত্তিতেই বৃহস্পতিবার ভোর ২ টায় গৌরীপুর শহরে তাঁর বাড়ি থেকে রাজীব শর্মাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ছেলের গ্রেফতারের খবরে মর্মাহত রাজীবের ৬৪ বছর বয়সী অসুস্থ বাবা শুক্রবার বেলার দিকে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।
ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসতেই গোটা অসম রাজ্যে হৈ চৈ শুরু হয়ে যায়। যার জেরে জেলা পুলিশ সুপার এবং জেলা বন কর্মকর্তাকে দ্রুত বদলি করা হয়েছে। এই সাংবাদিকের ওপর মিথ্যে অভিযোগে মামলা হয়েছে বলে শোরগোল ওঠে রাজ্য জুড়ে।
অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিচালক (আইনশৃঙ্খলা) জি পি সিং শুক্রবার সাংবাদিকদের জানান, "একটি বৈদ্যুতিন মিডিয়ার স্থানীয় সাংবাদিককে গ্রেপ্তারের বিষয়টি যথাযথ তদন্তের জন্য অপরাধ তদন্ত বিভাগে স্থানান্তর করা হয়েছে।" পুলিশ অফিসার শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাতে শর্মার বাসায় গিয়েছিলেন। সিং ধুবড়ি থানায়ও গিয়েছিলেন।
শুক্রবার স্থানীয় আদালত তার বাবার শেষকৃত্য শেষ করতে শর্মাকেকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন মঞ্জুর করে। এডিজিপি জানান, ভিজিল্যান্স অ্যান্ড দুর্নীতি দমন সংস্থা ডিএফও-র মামলা পৃথকভাবে তদন্ত করবে এবং এটি সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলার সাথে সম্পর্কিত নয়।
তিনি আরও জানানন, গত দুই বছরে গবাদি পশু পাচারের মামলায় ধুবড়ি জেলা পুলিশের ভূমিকা সম্পর্কে তদন্তের জন্য একটি বিশেষ তদন্ত দল (এসআইটি) গঠন করা হবে। "আমি আজ প্রাথমিক তদন্ত করেছি এবং আজকের রাতের মধ্যে আমার অনুসন্ধান ডিজিপি এবং মুখ্যমন্ত্রীর কাছে জমা দেব," জানিয়েছেন ওই পুলিশ কর্মকর্তা।
ক্ষমতাসীন বিজেপিও সাংবাদিকের গ্রেপ্তারের ঘটনার নিন্দা করেছে। এই বিষয়ে দলীয় একটি প্রতিনিধি দল মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোওয়ালের সাথে দেখা করে গ্রেপ্তারের নিন্দা ও মামলার নিরপেক্ষ তদন্ত চেয়ে একটি স্মারকলিপি জমা দিয়েছে। গুয়াহাটি প্রেসক্লাবও এই বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছে যাতে লেখকের পরিবার যাতে অযথা হয়রানি না হয়।
এদিকে, আসাম সরকার ধুবড়ি পুলিশ সুপার যুবরাজকে লিগিরিপুখুরিতে এর কমান্ড্যান্ট হিসাবে প্রথম আসাম পুলিশ ব্যাটালিয়নে স্থানান্তরিত করে। চরাইডেওর এসপি আনন্দ মিশ্র তাকে বদলি করেছেন।
বিশেষ শাখার এসপি শ্বেতঙ্ক মিশ্র চরাইদেও এসপি হিসাবে দায়িত্ব নেবেন বলে স্বরাষ্ট্র বিভাগের এক প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়েছে। পরিবেশ ও বন বিভাগও ধুবড়ি জেলা বন অফিসারকে গুয়াহাটির জিনেটিক সেল বিভাগে স্থানান্তর করে। জেনেটিক সেল বিভাগের বর্তমান ডিএফও, পি ভি ত্রিম্বাককে একটি আদেশ অনুসারে ধুবড়িতে পোস্ট করা হবে।
No comments