শঙ্কর পাণ্ডে, নিউজবাংলা ডেস্ক (দঃ২৪পরগণা) : ধীরে ধীরে আইলার ভয়াবহ স্মৃতি ধূসর হতে শুরু করেছিল। মনেপ্রানে সেই দুঃসহ তান্ডবের দিনগুলো ভুলে ছন্দে ফিরেছিল দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিস্তীর্ণ দ্বীপ সমুহ সাগর, সুন্দরবন এলাকার বাসিন্দারা। তবে শনিবারের বুলবুল-এর তান্ডব আবারও সেই আইলা'র স্মৃতিকে পুনরায় উসকে দিয়ে গেল।
ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্রবিন্দু সাগর দ্বীপে আছড়ে পড়ায় ভারী বৃষ্টির সঙ্গে ১২০ থেকে ১৩০ কিমি বেগে বয়ে গিয়েছে ঝড়ো হাওয়া। কয়েক ঘন্টার এই তান্ডবে বিধ্বস্ত হয়ে গিয়েছে বিস্তীর্ণ এলাকা। যার মধ্যে রয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগণার গোসাবা, সোনার গাঁ, লাস্কবাগান, সজনেখালি লাহিড়িপুর, আমলামেথী, বালি, রাঙাবেলিয়া, ঝড়খালির মতো নদী বেষ্টিত দ্বীপগুলো।
বহু এলাকায় একাধিক গাছ উপড়ে পড়েছে রাস্তার দু-পাশে। এমনকি বিদ্যুতের তারে গাছ পড়ার কারণে বহু এলাকা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে রয়েছে এখনও। বিদ্যুতের খুঁটি এমনকি মোবাইল টাওয়ারও বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। কাঁচা-পাকা মিলিয়ে বহু ঘর এই ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
স্থানীয় মানুষদের সহযোগিতায় বেশকিছু জায়গায় রাস্তা পরিষ্কার করে যান চলাচলের উপযোগী করে তুলছে প্রশাসন। তবে যথেচ্ছ ভাবে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে পড়ার কারণে বহু এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে বিদ্যুৎ দফতরের কর্মীদের। এবারের ঝড়ে আয়লার মতো ক্ষতি না হলেও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কিছু কম নয়।
বিশেষ করে ধান চাষের ক্ষতি যথেষ্ট পরিমাণে হয়েছে। বহু ধান ক্ষেত এখনো জলমগ্ন, নিকাশি ব্যবস্থা ভালো না হওয়ার কারনে। দিন কয়েকের মধ্যে জল নিকাশি ব্যবস্থার উন্নতি না হলে সব চেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে ধান চাষীরা। তবে এ ব্যাপারে সচেষ্ট হচ্ছে প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিরা।
কারণ তারাও চাইবে না আয়লার স্মৃতি আর একবার ফিরে আসুক সুন্দরবনবাসীর কাছে।
সোনা গাঁ গ্রামের বাসিন্দা সন্তু মণ্ডলের সাথে কথা বলে জানা গেল, বুলবুল ঝড়ের কথা যখন আবহাওয়া দপ্তর থেকে শুনলাম তখন থেকেই আতঙ্কে দিন কাটছিলো আমাদের।
কারণ আয়লার স্মৃতি এখনও জ্বলজ্বল করছে আমাদের মনে। তাই তো ভাবছিলাম, এবার হয়তো আর শেষ রক্ষা হবে না কিন্তু আয়লার মতো অতো শক্তিশালী না হওয়ার কারণে এ যাত্রায় সুন্দরবনের প্রত্যন্ত গ্রামের মানুষজন রক্ষা পেল।
No comments